এই লেখাটা ২০১৫ বিশ্বকাপ শুরুর আগে ফেসবুকে নোট হিসেবে পাবলিশড করেছিলাম । এবার নিজস্ব ব্লগে দিয়ে রাখলাম !!
ক্রিকেট খেলাটা আমার খুব ভাললাগা বিষয়গুলোর মধ্যে একটা । আমি শুধু একজন ক্রিকেটপ্রেমী না, যখন ক্রিকেট খেলা দেখি তখন নিজের চিন্তা ভাবনা থেকেই ম্যাচটা বিশ্লেষন করার চেষ্টা করি । সব সময়ই ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী গেমপ্লান তৈরি করাটাও আমার একটা অভ্যাস । কোন ব্যাটসম্যান কোন শটটা ভাল খেলছে, কোন ধরনের বল খেলতে পারছে না বা বোলার কোন বলটা করলে সুবিধা পাচ্ছে এসব ভাবার চেষ্টা করি আর কি । এখন আর সেভাবে খেলা দেখার সময় হয়ে উঠে না তবুও নিজের সেই ক্ষুদ্র বিশ্লেষনী শক্তি,কন্ডিশন আর দলগুলোর শক্তিমত্তা ও খেলোয়ারদের সাম্প্রতিক ফর্ম খেয়াল রেখে আমি চেষ্টা করেছি বিশ্বকাপের সেরা ৫ টি দলকে নিয়ে কিছু লেখার । আর এই ৫ দলের সাথে থাকছে আমার নিজের দেশের সম্ভাবনা ও সুযোগ নিয়ে কিছু কথা ।
ক্রিকেটকে বলা হয় মহা অনিশ্চয়তার খেলা তাই ক্রিকেট নিয়ে প্রেডিকশন করাটা একটু বোকামী । তারপরও আমার কাছে ৪ সেমিফিইনালিষ্ট এর মধ্যে ৩ টা দল হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড আর সাউথ আফ্রিকা । অপর জায়গাটায় আসতে পারে ভারত,পাকিস্তান বা শ্রীলংকার মধ্যে উপমহাদেশের যে কোন একটা দল। এটা কিছুটা খেলার কথা চিন্তা বলা আর কিছুটা আইসিসির উপর সন্দেহ করে বলা । কারন দিনশেষে ওরা ব্যবসায়ী, ব্যবসার স্বার্থের জন্য ওরা কোন দলকে বিশেষ সুবিধা দিতেও পারে । প্রথমেই বলে রাখি এই টূর্ণামেন্টে আমার বাজির ঘোড়া নিউজিল্যান্ড । যদিও জানি বিশ্বকাপটা জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে কাটিয়েই তাদের জিততে হবে।
অষ্ট্রেলিয়াঃ গত একযুগে অস্ট্রেলিয়া যা করেছে তাতে করে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে যে কোন কন্ডিশনে খেলা হোক না কেন তাদেরকে আপনার হিসেবের মধ্যে রাখতেই হবে। তাছাড়া খেলাটাও হবে নিজেদের কন্ডিশনে। আর দলটাও কি অসাধারন । এই দলে ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েল আর স্মিথদের মত বিদ্ধংসী ব্যাটসম্যানরা যেমন আছে তেমনি আছে সুন্দর একটা পেস এট্যাক যার নেতৃত্ব জনসনের মত খুনে বোলারের হাতে । ফকনরারের মত ব্যাটসম্যান এই দলের ৮ নম্বর ব্যাটসম্যান । অভাব যদি কিছু থেকে তবে সেটা মাইকেল বেভান বা হাসির মত ফিনিশারের । যদিও তাদের দলে উরাধুরা ফিনিশারের অভাব নেই ।কিন্তু এমন ব্যাটসম্যানরা তো আর প্রতিদিন জন্মায় না তবে ফিট মাইকেল ক্লার্ক এই অভাবটা অনায়াসেই পূরন করতে পারবে । অন্য যারাই বিশ্বকাপ জিতুক অস্ট্রেলিয়াকে চেজ করেই তাদেরকে সেটা করতে হবে।
নিউজিল্যান্ডঃ আগেই বলেছি এই বিশ্বকাপে আমার বাজির ঘোড়া নিউজিল্যান্ড ! আমাকে যদি এক ম্যাচ খেলেই কাপ দিয়ে দেওয়ার সুযোগ দেয়া হত তবে আমি ফাইনাল খেলাতাম অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ড কে । নিউজিল্যান্ড বরাবরই আমার কাছে মিনি অলরাউন্ডারের দল ছিল । যেসব খেলোয়ার একটু বোলিং পারে আবার একটু ব্যাটিংও পারে । অনেকেই তাদেরকে সেমি ফাইনালের টিম বলে তাতে অবশ্য এটাই প্রমান হয় যে , এই মিনি অলরাউন্ডাররা বিশ্বকাপের মত লম্বা আসরে কতটা কার্যকর। তবে তাদের এবারের টিমটা ব্যাতিক্রম । এই দলে গাপটিল,ম্যাককালাম, টেলর আর উইলিয়ামসন এর মত স্পেশালিষ্ট ব্যাটসম্যান যেমন আছে তেমনি আছে ঘন্টায় ১০০ মাইল বেগে বল করার মত স্পেশালিষ্ট বোলারও । সাথে কোরি এন্ডারসন এর মত বিদ্ধংসী অলরাউন্ডার আর “বুড়ো”ভেট্টোরির কথাও ভুলে যাবেন না । তবে জিমি নিশামকে মিস করব । তার বৈচিত্রপূর্ন স্লোয়ার আর লোয়ার অর্ডারে হার্ড হিটিং ব্যাটিংটা অনেক কার্যকারি কিন্তু তাকে বাদ দেয়াটাই আবার প্রমান করে তাদের দলটা কতটা ব্যালান্সড। আগেই বলেছিলাম যারাই জিতুক অস্ট্রেলিয়াকে কাটিয়ে আসতে হবে । সেক্ষেত্রেও নিউজিল্যান্ড এগিয়ে । তাসমান প্রতিপক্ষ হিসেবে বরাবরই তারা অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসেছে । ভুলে যাবেন না কন্ডিশনটা কিন্তু তাদেরও ।
সাউথ আফ্রিকাঃ সাউথ আফ্রিকার নাম আসলেই চোকার্স কথটা আসবেই । তবে আমি এইসবে বিশ্বাস করি না । হ্যাঁ,চাপ টাপ বলে কিছু একটা হয়ত সৃষ্টি হয় কিন্তু সেটাতো সবারই হয় এবং বিশ্বকাপের মত আসরে সব সময়ই থাকবে। তারা হয়ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওভারকাম করতে পারে নাই এই যা !! গত কিছুদিনে তারা যা করছে সেটা যদি অব্যাহত রাখতে পারে তো ফাইনালে তারাও আসতে পারে অনায়াসেই । আমলা , ভিলিয়ার্স, ডু প্লেসিস আর ষ্টেইন শুধুমাত্র এই চারজনেই দক্ষিন আফ্রিকাকে নিয়ে যেতে পারেন ফাইনালে । তবে ফাইনাল যেই খেলুক চোখ রাখুন ডি ভিলিয়ার্স এর উপর । আমি নিশ্চিত ব্যাটসম্যান হিসেবে ডি ভিলিয়ার্স এই বিশ্বকাপটাকে নিজের করে নিতে যাচ্ছেন ।
পাকিস্থানঃ পাকিস্থান সব সময়ই আন প্রেপিক্টেবল টিম । তাই তাদেরকে নিয়ে খুব বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় । তবে নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে খেলেতে পারলে বিশেষ করে পাকিস্থানের ব্যাটিং যদি ক্লিক করে তবে উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে সেমিফাইনালে খেলার সবচেয়ে ভাল সম্ভাবনা আছে পাকিস্থানের। বোলিং কোনদিনই পাকিস্থানের কোন সমস্যা ছিল না এখনও নয় । আজমল আর হাফিজ না থাকাতে অবশ্য তারা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে । এক আজমল থাকলেই আমি তাদের সম্ভবনাটা ১০% বাড়িয়ে দিতাম । আর হাফিজ না থাকাতে আকমলকে সাথে নিয়ে দলের তিন সিনিয়র ব্যাটসম্যান ইউনিস খান, মিজবাহ আর আফ্রিদিকেই কিছু করতে হবে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্থানের থাকা না থাকার অনেকখানি নির্ভর করছে এই তিনজনের উপরই ।
ভারতঃ ভারতের বর্তমান অবস্থা তেমন ভাল না । কিন্তু গতবারের চ্যাম্পিয়ন আর খেলাটা ক্রিকেট বলেই তাদেরকে বাদ দেয়া যাচ্ছে না । ভুলে যাবেন না এই খেলাটাকে আইসিসি না ভারত নিয়ন্ত্রন করে । আর দিনশেষে ক্রিকেট তাদের কাছে ব্যবসা ছাড়া কিছু নয় । টূর্ণামেন্ট থেকে ভারতের বিদায় এর আয় কমিয়ে দিবে অনেকখানিই । ভারতের সবচেয়ে দূর্বলতা তাদের বোলিং কিন্তু যতটা বলা হচ্ছে ততটা বোধহয় নয়, তবে সম্ভাব্য অন্য দলগুলোর তুলনায় দুর্বল তো বটেই । অতীতে গ্রেট সব ব্যাটসম্যানরা তাদের ব্যাটিং দিয়ে এই দূর্বলতা ঢেকে দিয়েছিলেন। এবারও বলা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ আছে ভারতের কিন্তু আমার কাছে এই ব্যাটিং লাইন আপে কোহলি ছাড়া আর কাউকেই চোখে পড়ে না। রাহানে , রোহিত শর্মারা চেষ্টা করছেন মাঝে মাঝে সফলও হচ্ছেন , ধোনি তো নিভু নিভু করে জ্বলছেন। তবে ব্যাটিংয়ে কিছু করতে হলে কোহলিকেই করতে হবে। শচীনের রেকর্ড ভাঙ্গার একমাত্র এই যোগ্যতা সম্পন্ন খেলোয়ারটি বিশ্বকাপের মত আসরে নিজেকে অবশ্যই মেলে ধরতে চাইবেন । একজন গ্রেট ব্যাটসম্যান হওয়ার মত সব যোগ্যতাই তার আছে। তবে কথা সেই আগেরটাই এক কোহলিতে আর কতদূর ।
শ্রীলংকাঃ লংকানদের নিয়ে বেশি কিছু বলব না , শুধু বলব এরা প্রকৃত ফাইটার । সেমি ফাইনালের চতুর্থ দল হতে পারে তারাও । তবে তাদের ভাল করা নির্ভর করবে জয়া,সাঙ্গা,ম্যাথুস আর মালিঙ্গার উপর। নিশ্চিত থাকেন নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ হিসেবে তারা একটুও ছেড়ে কথা বলবে না ।
বাংলাদেশঃ নিজের দেশকে নিয়ে কিছু তো অবশ্যই বলতে হবে। কোনভাবে যদি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় তবে উপরের লেখা গুলো নিয়ে কে চিন্তা করতে যাবে বলুন । তবে আবেগ আর যুক্তি বিপরীতধর্মী তাই যুক্তি বলছে সেটা সম্ভব নয় । তা না হোক আমরা আমাদের সম্ভবনা নিয়ে কথা বলতেই পারি । বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে আমার কিছু বলার নাই , আমার কাছে বাংলাদেশের বোলিং সব সময়ই ভাল নম্বর পেয়ে আসে। এমনকি আমার এটাও মনে হয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যদি গড়ে প্রতিটি ম্যাচে ২৭০ -২৮০ রান করে করত তবে এই টি টুয়েন্টির যুগেও যে কোন দলের বিপক্ষে শতকরা ৬০ ভাগ ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আমাদের বোলারদের আছে, অন্তত নিজেদের কন্ডিশনে । তাই বাংলাদেশের ভাল করা আর না করাটা নির্ভর করছে ব্যাটসম্যানদের উপর । আমাদের সাফল্য একক নৈপূন্য নয় বরং দলীয় সামর্থের উপর আমরা নিভরশীল । তবে আমি এখনও মনে করি তাইজুলের পরিবর্তে রাজ্জাকের টিম থাকা উচিত ছিল । সাকিব , তামীম, মুশফিক তো আছেই, মাহমুদ্দৌলাও ভাল করবে তবে আমি আলাদা করে ব্যাটিংএ এর মামিনুল ও বোলিংয়ে রুবেল এর ভাল করার ব্যাপারে আশাবাদী। সুপার এইট এ যাওয়ার মত কল্পবিলাসী হতে ইচ্ছুক নই , তাই আমার চাওয়া লড়াই করে দেশের সম্মান বজায় রাখা সাথে দুটি জয় ! সেটা হতে পারে যে কোন দলের বিপক্ষেই ।
ইমরান হাশমির মত ক্রিকেটে আমার প্রেডিকশন সত্যি হওয়ার হাড়টা একটু বেশিই । যদিও আমি এইটা অন্য কোন কাজে লাগাই না। তবে গতবার টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপে বলেছিলাম ওয়েষ্ট ইন্ডিজ এর কথা আর দ্যাখেন তারা ক্যামনে যেন চ্যাম্পিয়নও হয়ে গেল । দেখা যাক এবার নিউজিল্যান্ড আমার মান রাখতে পারে কিনা ????
ক্রিকেট খেলাটা আমার খুব ভাললাগা বিষয়গুলোর মধ্যে একটা । আমি শুধু একজন ক্রিকেটপ্রেমী না, যখন ক্রিকেট খেলা দেখি তখন নিজের চিন্তা ভাবনা থেকেই ম্যাচটা বিশ্লেষন করার চেষ্টা করি । সব সময়ই ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী গেমপ্লান তৈরি করাটাও আমার একটা অভ্যাস । কোন ব্যাটসম্যান কোন শটটা ভাল খেলছে, কোন ধরনের বল খেলতে পারছে না বা বোলার কোন বলটা করলে সুবিধা পাচ্ছে এসব ভাবার চেষ্টা করি আর কি । এখন আর সেভাবে খেলা দেখার সময় হয়ে উঠে না তবুও নিজের সেই ক্ষুদ্র বিশ্লেষনী শক্তি,কন্ডিশন আর দলগুলোর শক্তিমত্তা ও খেলোয়ারদের সাম্প্রতিক ফর্ম খেয়াল রেখে আমি চেষ্টা করেছি বিশ্বকাপের সেরা ৫ টি দলকে নিয়ে কিছু লেখার । আর এই ৫ দলের সাথে থাকছে আমার নিজের দেশের সম্ভাবনা ও সুযোগ নিয়ে কিছু কথা ।
ক্রিকেটকে বলা হয় মহা অনিশ্চয়তার খেলা তাই ক্রিকেট নিয়ে প্রেডিকশন করাটা একটু বোকামী । তারপরও আমার কাছে ৪ সেমিফিইনালিষ্ট এর মধ্যে ৩ টা দল হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড আর সাউথ আফ্রিকা । অপর জায়গাটায় আসতে পারে ভারত,পাকিস্তান বা শ্রীলংকার মধ্যে উপমহাদেশের যে কোন একটা দল। এটা কিছুটা খেলার কথা চিন্তা বলা আর কিছুটা আইসিসির উপর সন্দেহ করে বলা । কারন দিনশেষে ওরা ব্যবসায়ী, ব্যবসার স্বার্থের জন্য ওরা কোন দলকে বিশেষ সুবিধা দিতেও পারে । প্রথমেই বলে রাখি এই টূর্ণামেন্টে আমার বাজির ঘোড়া নিউজিল্যান্ড । যদিও জানি বিশ্বকাপটা জিততে হলে অস্ট্রেলিয়াকে কাটিয়েই তাদের জিততে হবে।
অষ্ট্রেলিয়াঃ গত একযুগে অস্ট্রেলিয়া যা করেছে তাতে করে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে যে কোন কন্ডিশনে খেলা হোক না কেন তাদেরকে আপনার হিসেবের মধ্যে রাখতেই হবে। তাছাড়া খেলাটাও হবে নিজেদের কন্ডিশনে। আর দলটাও কি অসাধারন । এই দলে ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েল আর স্মিথদের মত বিদ্ধংসী ব্যাটসম্যানরা যেমন আছে তেমনি আছে সুন্দর একটা পেস এট্যাক যার নেতৃত্ব জনসনের মত খুনে বোলারের হাতে । ফকনরারের মত ব্যাটসম্যান এই দলের ৮ নম্বর ব্যাটসম্যান । অভাব যদি কিছু থেকে তবে সেটা মাইকেল বেভান বা হাসির মত ফিনিশারের । যদিও তাদের দলে উরাধুরা ফিনিশারের অভাব নেই ।কিন্তু এমন ব্যাটসম্যানরা তো আর প্রতিদিন জন্মায় না তবে ফিট মাইকেল ক্লার্ক এই অভাবটা অনায়াসেই পূরন করতে পারবে । অন্য যারাই বিশ্বকাপ জিতুক অস্ট্রেলিয়াকে চেজ করেই তাদেরকে সেটা করতে হবে।
নিউজিল্যান্ডঃ আগেই বলেছি এই বিশ্বকাপে আমার বাজির ঘোড়া নিউজিল্যান্ড ! আমাকে যদি এক ম্যাচ খেলেই কাপ দিয়ে দেওয়ার সুযোগ দেয়া হত তবে আমি ফাইনাল খেলাতাম অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ড কে । নিউজিল্যান্ড বরাবরই আমার কাছে মিনি অলরাউন্ডারের দল ছিল । যেসব খেলোয়ার একটু বোলিং পারে আবার একটু ব্যাটিংও পারে । অনেকেই তাদেরকে সেমি ফাইনালের টিম বলে তাতে অবশ্য এটাই প্রমান হয় যে , এই মিনি অলরাউন্ডাররা বিশ্বকাপের মত লম্বা আসরে কতটা কার্যকর। তবে তাদের এবারের টিমটা ব্যাতিক্রম । এই দলে গাপটিল,ম্যাককালাম, টেলর আর উইলিয়ামসন এর মত স্পেশালিষ্ট ব্যাটসম্যান যেমন আছে তেমনি আছে ঘন্টায় ১০০ মাইল বেগে বল করার মত স্পেশালিষ্ট বোলারও । সাথে কোরি এন্ডারসন এর মত বিদ্ধংসী অলরাউন্ডার আর “বুড়ো”ভেট্টোরির কথাও ভুলে যাবেন না । তবে জিমি নিশামকে মিস করব । তার বৈচিত্রপূর্ন স্লোয়ার আর লোয়ার অর্ডারে হার্ড হিটিং ব্যাটিংটা অনেক কার্যকারি কিন্তু তাকে বাদ দেয়াটাই আবার প্রমান করে তাদের দলটা কতটা ব্যালান্সড। আগেই বলেছিলাম যারাই জিতুক অস্ট্রেলিয়াকে কাটিয়ে আসতে হবে । সেক্ষেত্রেও নিউজিল্যান্ড এগিয়ে । তাসমান প্রতিপক্ষ হিসেবে বরাবরই তারা অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসেছে । ভুলে যাবেন না কন্ডিশনটা কিন্তু তাদেরও ।
সাউথ আফ্রিকাঃ সাউথ আফ্রিকার নাম আসলেই চোকার্স কথটা আসবেই । তবে আমি এইসবে বিশ্বাস করি না । হ্যাঁ,চাপ টাপ বলে কিছু একটা হয়ত সৃষ্টি হয় কিন্তু সেটাতো সবারই হয় এবং বিশ্বকাপের মত আসরে সব সময়ই থাকবে। তারা হয়ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওভারকাম করতে পারে নাই এই যা !! গত কিছুদিনে তারা যা করছে সেটা যদি অব্যাহত রাখতে পারে তো ফাইনালে তারাও আসতে পারে অনায়াসেই । আমলা , ভিলিয়ার্স, ডু প্লেসিস আর ষ্টেইন শুধুমাত্র এই চারজনেই দক্ষিন আফ্রিকাকে নিয়ে যেতে পারেন ফাইনালে । তবে ফাইনাল যেই খেলুক চোখ রাখুন ডি ভিলিয়ার্স এর উপর । আমি নিশ্চিত ব্যাটসম্যান হিসেবে ডি ভিলিয়ার্স এই বিশ্বকাপটাকে নিজের করে নিতে যাচ্ছেন ।
পাকিস্থানঃ পাকিস্থান সব সময়ই আন প্রেপিক্টেবল টিম । তাই তাদেরকে নিয়ে খুব বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় । তবে নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে খেলেতে পারলে বিশেষ করে পাকিস্থানের ব্যাটিং যদি ক্লিক করে তবে উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে সেমিফাইনালে খেলার সবচেয়ে ভাল সম্ভাবনা আছে পাকিস্থানের। বোলিং কোনদিনই পাকিস্থানের কোন সমস্যা ছিল না এখনও নয় । আজমল আর হাফিজ না থাকাতে অবশ্য তারা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে । এক আজমল থাকলেই আমি তাদের সম্ভবনাটা ১০% বাড়িয়ে দিতাম । আর হাফিজ না থাকাতে আকমলকে সাথে নিয়ে দলের তিন সিনিয়র ব্যাটসম্যান ইউনিস খান, মিজবাহ আর আফ্রিদিকেই কিছু করতে হবে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্থানের থাকা না থাকার অনেকখানি নির্ভর করছে এই তিনজনের উপরই ।
ভারতঃ ভারতের বর্তমান অবস্থা তেমন ভাল না । কিন্তু গতবারের চ্যাম্পিয়ন আর খেলাটা ক্রিকেট বলেই তাদেরকে বাদ দেয়া যাচ্ছে না । ভুলে যাবেন না এই খেলাটাকে আইসিসি না ভারত নিয়ন্ত্রন করে । আর দিনশেষে ক্রিকেট তাদের কাছে ব্যবসা ছাড়া কিছু নয় । টূর্ণামেন্ট থেকে ভারতের বিদায় এর আয় কমিয়ে দিবে অনেকখানিই । ভারতের সবচেয়ে দূর্বলতা তাদের বোলিং কিন্তু যতটা বলা হচ্ছে ততটা বোধহয় নয়, তবে সম্ভাব্য অন্য দলগুলোর তুলনায় দুর্বল তো বটেই । অতীতে গ্রেট সব ব্যাটসম্যানরা তাদের ব্যাটিং দিয়ে এই দূর্বলতা ঢেকে দিয়েছিলেন। এবারও বলা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ আছে ভারতের কিন্তু আমার কাছে এই ব্যাটিং লাইন আপে কোহলি ছাড়া আর কাউকেই চোখে পড়ে না। রাহানে , রোহিত শর্মারা চেষ্টা করছেন মাঝে মাঝে সফলও হচ্ছেন , ধোনি তো নিভু নিভু করে জ্বলছেন। তবে ব্যাটিংয়ে কিছু করতে হলে কোহলিকেই করতে হবে। শচীনের রেকর্ড ভাঙ্গার একমাত্র এই যোগ্যতা সম্পন্ন খেলোয়ারটি বিশ্বকাপের মত আসরে নিজেকে অবশ্যই মেলে ধরতে চাইবেন । একজন গ্রেট ব্যাটসম্যান হওয়ার মত সব যোগ্যতাই তার আছে। তবে কথা সেই আগেরটাই এক কোহলিতে আর কতদূর ।
শ্রীলংকাঃ লংকানদের নিয়ে বেশি কিছু বলব না , শুধু বলব এরা প্রকৃত ফাইটার । সেমি ফাইনালের চতুর্থ দল হতে পারে তারাও । তবে তাদের ভাল করা নির্ভর করবে জয়া,সাঙ্গা,ম্যাথুস আর মালিঙ্গার উপর। নিশ্চিত থাকেন নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ হিসেবে তারা একটুও ছেড়ে কথা বলবে না ।
বাংলাদেশঃ নিজের দেশকে নিয়ে কিছু তো অবশ্যই বলতে হবে। কোনভাবে যদি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় তবে উপরের লেখা গুলো নিয়ে কে চিন্তা করতে যাবে বলুন । তবে আবেগ আর যুক্তি বিপরীতধর্মী তাই যুক্তি বলছে সেটা সম্ভব নয় । তা না হোক আমরা আমাদের সম্ভবনা নিয়ে কথা বলতেই পারি । বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে আমার কিছু বলার নাই , আমার কাছে বাংলাদেশের বোলিং সব সময়ই ভাল নম্বর পেয়ে আসে। এমনকি আমার এটাও মনে হয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যদি গড়ে প্রতিটি ম্যাচে ২৭০ -২৮০ রান করে করত তবে এই টি টুয়েন্টির যুগেও যে কোন দলের বিপক্ষে শতকরা ৬০ ভাগ ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আমাদের বোলারদের আছে, অন্তত নিজেদের কন্ডিশনে । তাই বাংলাদেশের ভাল করা আর না করাটা নির্ভর করছে ব্যাটসম্যানদের উপর । আমাদের সাফল্য একক নৈপূন্য নয় বরং দলীয় সামর্থের উপর আমরা নিভরশীল । তবে আমি এখনও মনে করি তাইজুলের পরিবর্তে রাজ্জাকের টিম থাকা উচিত ছিল । সাকিব , তামীম, মুশফিক তো আছেই, মাহমুদ্দৌলাও ভাল করবে তবে আমি আলাদা করে ব্যাটিংএ এর মামিনুল ও বোলিংয়ে রুবেল এর ভাল করার ব্যাপারে আশাবাদী। সুপার এইট এ যাওয়ার মত কল্পবিলাসী হতে ইচ্ছুক নই , তাই আমার চাওয়া লড়াই করে দেশের সম্মান বজায় রাখা সাথে দুটি জয় ! সেটা হতে পারে যে কোন দলের বিপক্ষেই ।
ইমরান হাশমির মত ক্রিকেটে আমার প্রেডিকশন সত্যি হওয়ার হাড়টা একটু বেশিই । যদিও আমি এইটা অন্য কোন কাজে লাগাই না। তবে গতবার টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপে বলেছিলাম ওয়েষ্ট ইন্ডিজ এর কথা আর দ্যাখেন তারা ক্যামনে যেন চ্যাম্পিয়নও হয়ে গেল । দেখা যাক এবার নিউজিল্যান্ড আমার মান রাখতে পারে কিনা ????