?সেটাও অনুমিত । চীন মিয়ানমারের বরাবরের বন্ধু,আর ভারত হতে চাচ্ছে নব্য বন্ধু ।কারনটা সোজা -সামরিক শাসনের ঘেরাটোপ থেকে বেড়িয়ে মায়ানমার তাদের দেশে বিনিয়োগের রাস্তা উম্মুক্ত করে দিয়েছে । বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদের কারনে এটা এতটাই সম্ভাবনাময় যে,অনেকেই এটাকে ১৯৭৮ সালে চীনের বিনিয়োগ বাজার উম্মুক্ত করে দেয়ার সাথে তুলনা করেছেন । মাত্র ৪০ বছরে চীনের অর্থনৈতিক উত্থান আজ কোথায় সেটা সবাই আমরা জানি । কাজেই ঢাক গুরগুর করলেও কেউই চাইবে না মিয়ানমার এর সাথে সম্পর্ক খারাপ করে বিনিয়োগের সুযোগ হাতছাড়া করতে ।আর ভারতের মিয়ানমার -থাইল্যান্ডকে নিয়ে মহা সড়কের পরিকল্পনায় মিয়ানমার অতি গুরত্বপুর্ন । আরও একটা সন্দেহ উড়িয়ে দেয়া যায় না - রাখাইন রাজ্য প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর তাই মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীগুলো যদি অতীত ইতিহাসের সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গাদের জাতিগত ভাবে উৎখাত করতে চায় ,সেটাও হলে হতে পারে । কারন নিজেদের স্বার্থে মধ্য আফ্রিকার অনেক দেশের সরকার পর্যন্ত পরিবর্তন করানোর রেকর্ড এদের আছে । সবমিলে মিয়ানমারের সাথে স্বার্থের কারনেই বড় বড় রাষ্ট্রগুলো সেভাবে কিছু বলছে না । তুরস্ক ,মালয়েশিয়া কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কিন্তু সেটা যথাযথ বা যথেষ্ট নয় । তবে মিয়ানমারের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ ।
রোহিঙ্গা সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগতেছি আমরাই- একদিকে মানবিকতা আর একদিকে দেশের স্বার্থ । তবে এখন পর্যন্ত মানবিক দিক বিবেচনায় আমাদের সরকার যা করেছে সেটা যথার্থ । আশ্রয়প্রার্থীরা চিকিৎসা সহায়তা ও ত্রান পাচ্ছে,সাময়িক আবাসন এর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে । তবে দীর্ঘমেয়াদে আর্ন্তজাতিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সাহায্য নেয়া উচিত ।
ব্যক্তি পর্যায়ে এবং সাংগঠনিকভাবে কিছু মানুষও বেসরকারিভাবে সাহায্য করছে । মানুষ হয়ে মানুষের বিপদে দ্বাড়ানোই এখন উচিত ।তাই আপাতত তাদের খাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা করাই আমাদের দায়িত্ব, সাথে শরনার্থীদের যথাযথ তালিকা করা উচিত দ্রুত । সরকারের মুল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত যদ দ্রুত সম্ভব তাদেরকে নিজ ভুমিতে ফেরত পাঠানো । আর্ন্তজাতিক লবীতে আওয়াজ তুলতে হবে তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের । আশার কথা আগামীকাল থেকেই হয়তো শরনার্থীদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শুরু হবে । মিয়ানমার সরকার বলেছে নাগরিকত্ব প্রমান করতে পারলে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিবে ,সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের কোন নাগরিকত্ব নেই । তবে সঠিক কুটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যেতে পারলে ফেরত পাঠানো সম্ভব ।প্রমান এর আগেও জাতিসংঘের সহায়তায় ১৯৭৮ সালে প্রায় আড়াইলক্ষ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল ।
মানবিক কারনে যেমন আজ রোহিঙ্গাদের পাশে আমরা দ্বাঁড়িয়েছি তেমনিভাবে চাইবো সমস্যার সঠিক সমাধানের মাধ্যমে এসব শরনার্থীকে মিয়ানমারে পাঠানো হবে ।
আশাকরি রাস্ট্রীয় এই সমস্যায় সকল নাগরিক ও রাজনৈতিক দলগুলোর এক হতে থাকতে পারবে ।
স্বজন হারানো ,ঘর হারা মানুষগুলো ফিরে যেতে পারবে নিজ ভুমিতে ।