এই লেখাটা লিখেছিলাম ২০১৬ সালের ১৪ মে । আমার বাড়ির পাশের আমারই এক প্রাক্তন ছাত্র আমাকে যুদ্ধাপরাধীর শাস্তির ব্যাপারে একটা ফেসবুক পোষ্টে ট্যাগ দিয়েছিল। বিষয়টা ছিল ফিলিস্থিন উলামা পরিষদ এবং হিন্দুস্থান জামাত কর্তৃক নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করায় নিন্দা জানানো । এই বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছিলাম না কিন্তু ও যেহুতু আমাকে পোষ্টে ট্যাগ দিয়েছিল তারই প্রেক্ষিতে কিছু বলা । আমি আগেও বহুবার একটা কথাই বলেছি “ইসলাম আর জামাতে ইসলাম এক কথা নয় “ জামাত একটি আর্ন্তজাতিক সংগঠন। সারা বিশ্বে এর শাখা ছড়িয়ে আছে তাই জ্ঞাতি ভাইয়ের জন্য আর একজন জ্ঞাতি ভাই চিল্লাবে সেটাই তো স্বাভাবিক ।সেটা ভারতীয় ও হতে পারে পাকিস্তানীও হতে পারে । পাকিস্থান জামাত -হিন্দুস্থান জামাত ,মুসলিম ব্রাদারহুড আর বাংলাদেশের জামাতে ইসলাম সবাই একসূত্রে গাঁথা । এই আর্ন্তজাতিক সংগঠনটি যখন দেশপ্রেম আর দেশ নিয়ে কথা বলে তখন সত্যি আমার হাসি পায় ! আমাকে বুঝানোর কিছু নাই ,আমি মুসলিম পরিবারের সন্তান ,পারিবারিকভাবেই নৈতিক আর ধর্মীয় শিক্ষা পাইছি বাকিটুকু ইসলামী বইপত্র পড়ে শেখার চেষ্টা করছি ।আমি হুজুরদের কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস করি না । কারন যে কোন বিষয়ে তারা জানুক আর না জানুক নিজের মত করে হলেও একটা ব্যাখা দিয়ে দ্যায় :) আজ পর্যন্ত ছোট/বড় যে কোন হুজুরকে প্রশ্ন করে তার উত্তর দিতে পারেন নাই বা বলেছেন যে বিষয়টা আমার জানা নেই এমনটা আমি হতে দেখিনি । মাথায় টুপি আর দাড়ি রাখলেই হুজুর রা নিজেদের ধর্মের সকল কিছুর অধিকারি ভাবতে শুরু করেন আর ধর্মীয় নেতাদের বিশ্বাস করার প্রশ্নেই আসে না কারন এরা জাত ব্যবসায়ী, মানুষকে ধর্মের ভয় দেখিয়ে আর ধর্মকে পূজী করে ব্যবসা করেই এরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন ( উপরের দুটি মন্তব্যই অবশ্য পাইকারি হারে সবার জন্য প্রযোজ্য নয়, দুই একজন ব্যতিক্রম আছেন তবে তারা ধর্ম নিয়ে কখনই এত লাফালাফি করেন না- এমন দুই একজনকে বলতে শুনেছি -ধর্ম সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তালা আর সেটা রক্ষাও করবেন উনি, আমার কাজ সেটা পালন করা আর মানুষকে ধর্মের পথে দাওয়াত দেওয়া )। আমার ইসলাম আমাকে শিক্ষা দিয়েছে সহনশীলতা,মানবিকতার, ন্যায়ের । এই শিক্ষা নিয়ে একজন লেবাসধারী হুজুর যে কিনা যুদ্ধাপরাধী,হত্যাকারী তার পক্ষে কথা বলার শিক্ষা আমার ইসলাম আমাকে দ্যায় নাই । যাউগ্যা অত প্যাচাল না পারি- তুরস্ক নাকি তার রাস্ট্রদূতরে ডাইকা নিছে ,নিজামীর ফাসিঁর ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য । অনেকেই মনে করায় দিচ্ছেন যে তুর্কীরা আর্মেনিয়ানদের সাথে কি করেছিল । আমার অবশ্য অত কিছু মনে হচ্ছে না ,কারন একদল যুদ্ধাপরাধী আর একদলকে সাপোর্ট দিবে এটাই তো স্বাভাবিক নাকি ? নিজামীরে ঝোলানোর পর পাকিদের নাকি কান্নাটা হচ্ছে দেখার মত !! ওরা মানবধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে !!হায়রে, যে দেশে প্রতিনিয়ত মানবধিকার ধুলায় লুন্ঠিত হয়-যেখানে একই ধর্মের হওয়া সত্বেও শুধুমাত্র শিয়া সূন্নী মতভেদের কারনে পুলিশ ষ্টেশন থেকে বের করে জবাই করা হয়, যেখানে নারীদের কোন অধিকার নেই ,যেখানে মসজিদে নামাযের সময় বোমা বিষ্ফোরন হয় । খুন হত্যা যখম থেকে যে দেশে খেলোয়াররাও ছাড় পায় না , প্রতি সেকেন্ডে যেখানে মানবধিকার লূন্ঠিত হয় তারাই বলছে মানবধিকার এর কথা !! এর চাইতে হাস্যকর কিছু করার ক্ষমতা বোধহয় আর তাদের নেই ।পাকিরা চেচাঁমেচি করুক, ধর্ম ব্যবসায়ীরা হাসঁফাস করুক কিন্তু আমরা একটু তৃপ্তি পেতেই পারি । যারা এই দেশটার জন্ম চায় নি, যারা আমার দেশের মান আর সম্মানকে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে আমার দেশের ভাই,মামা,চাচাদের । ধর্ষন করেছে আমাদের মা বোনদের ,যাদের অন্যায় আর অত্যাচার থেকে বাদ যায়নি শিশুরাও । তাদের বিচারে এতটুকু তৃপ্তি আমরা পেতেই পারি ।
#রাজাকার_নিপাত_যাক
Saturday, May 13, 2017
যুদ্ধাপরাধী নিয়ে ক্যাচাল
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment