Tuesday, May 16, 2017

ন্যাড়া কাহিনী

গতকাল সকালে উঠেই মনে হইলো মাথা ন্যাড়া করে ফেলবো, যেই ভাবা সেই কাজ ! সেলুনের ছেলেটাকে ডেকে এনে মাথা ন্যাড়া করে ফেললাম। শুধু ন্যাড়া করেই ক্ষ্যান্ত হই নাই সেটা ফেসবুকেও আপলোড করে দিছি। এই নিয়ে কেউ খুশি আবার অনেকেই নাখোস। একজন তো আমাকে বলে বসেছেন-শিক্ষক মানুষ মাথা ন্যাড়া করা কি ঠিক ? ছাত্র ছাত্রী দেখলে কি মনে করবে ?
মাথা ন্যাড়া্ করাটা দোষের কি বুঝলাম না ! পরে ভেবে দেখলাম দোষ আসলে আমারও না, সেই ব্যক্তিরও না। ছোট বেলা থেকেই আমরা জেনে এসেছি- চুল ঘন ও কালো করা্র চেষ্টা ছাড়া,কোন দোষ করলে শাস্তি স্বরুপ ধরে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয় । এমন কি মাথা ন্যাড়া করলে শুনতে হত নানা টিপ্পনী। সহপাঠীরা বলতো –
‘ঠুল্লা মাথা বেল বেল পইড়া গেল মাথার তেল।’
কারনটাও অবশ্য অনুমেয় কারন ছোট বেলায় মা, দাদীরা ন্যাড়া মাথায় জবজব করে তেল দিয়ে দিতেন ।
কিন্তু মাথা ন্যাড়া কি শুধূ কেশ ঘন কালো আর দোষ করলে শাস্তি স্বরুপ করা হয় ?
জন্মের পরপরই ৭ দিনের মধ্যে মাথা কামানো দিয়ে শুরু হয় ন্যাড়া করার পালা, জন্মানোর পরপরই নিশ্চই কেউ দোষ করে না তাই নিশ্চিত অন্য কোন এক অজানা কারনে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয় ।
হিন্দু ধর্মে মা বাবা মারা গেলে শ্রাদ্ধের সময় মাথা ন্যাড়া করার রেওয়াজ রয়েছে। আবার এই ধর্মের সদ্য বিধবারাও স্বামীর মৃত্যু শোকে মাথা ন্যাড়া করে থাকেন। অর্থাৎ ন্যাড়া মাথা শোকের আমেজ বহন করে এবং সেটা ধর্মীয় মতে । আবার তীর্থযাত্রীরা মহিলা পুরুষরাও গয়া কাশি বৃন্দাবন ঘুরে আসলে মাথা ন্যাড়া করেন,এটা হয়তো পবিত্রতার স্বরুপ করে থাকেন ।
ইসলাম ধর্মেও পুরুষরা হজ্বের সময় মাথা ন্যাড়া করেন । মানে এখানেও মাথা ন্যাড়া করার সাথে ধর্মীয় সম্পর্ক বিদ্যমান ।
বৌদ্ধ ধর্মের মন্ক বা সন্যাসীদের কথা ভাবলেই প্রথমেই আসে ন্যাড়া মাথা -এখানেও ধর্মের সাথে ন্যাড়া মাথা জড়িয়ে গেছে । অর্থাৎ মাথা ন্যাড়া শুধু দোষের কারনে নয় ধর্মও বিভিন্ন কারনে মাথা ন্যাড়াকে সমর্থন দিয়েছে ।
আবার যুগে যুগে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও মাথা ন্যাড়া করা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । ফিলিপায়েন্সের মানিলা তে চব্বিশ জন শ্রমিক, তাদেরকে ছাঁটাই করার প্রতিবাদে মাথা ন্যাড়া করে প্রতিবাদ শুরু করে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে চীনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিঙ্গ বৈষম্যের নীতির বিরুদ্ধে ৪ জন মেয়ে মাথা ন্যাড়া করে প্রতিবাদ করে। এভাবেই যুগে যুগে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে কাজ করেছে ন্যাড়া মাথা ।
এতো গেলো ন্যাড়া মাথার ধর্মীয় আর সামাজিক দিক,চলেন দেখি বৈজ্ঞানিক ভাবে কি ব্যাখা দেয়া হয়েছে - সোশ্যাল সাইকোলজি অ্যান্ড পারসোনালিটি সায়েন্স জার্নালে আমেরিকার পেনসিলভিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ারটন স্কুলের অধ্যাপক আলবার্ট ম্যানিস দীর্ঘ গবেষনা করে জানিয়েছেন- চুল কামিয়ে চকচকে ন্যাড়া মাথার মানুষরা সচারচর ক্ষুরধার ও কঠিন স্বভাবের। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে তাদের প্রভাবশালী ও বেশি পৌরুষ বিরাজ করে।
এতো গেলো ন্যড়া মাথার স্বপক্ষে যুক্তি । এবার চলুন চিনে আসি ন্যাড়া মাথার বিখ্যাত কিছু ব্যক্তিকে ।
মহাত্মা গান্ধীকে কে না চিনেন, দেশ সেবার আজীবন ব্রত নিয়ে অহিংসবাদী এই মহান নেতা আজীবন ছিলেন ন্যাড়া মাথায় । তিব্বতীয়ান নেতা ও ধর্মীয় গুরু দালাই লামাও ন্যাড়া মাথার মানুষ ।
খেলার জগতেও ন্যাড়া মাথার জয় জয়কার । ন্যাড়া ফুটবলারের সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না তার মধ্যে প্রথমেই মনে পড়বে “দ্য ফেনোমেনন” নামে খ্যাত রোনাল্ডোর কথা । ন্যাড়া মাথাকে ব্রান্ডিং করার জন্য রোনাল্ডোর নামটা উপরের দিকেই থাকবে । এরপর যদি কারও চকচকে মাথার কথা মমে পড়ে তো সেটা জিনেদিনে জিদান , অবশ্য এক সময়ের ফ্রান্সের গোলকিপার ফাবিয়ান বার্থেজও ন্যাড়া মাথার জন্য পরিচিতি লাভ করেছিলেন ।
বাস্কেট বলে ন্যাড়া মাথার অভাব নেই তবে বিখ্যাত নামটা অবশ্যই মাইকেল জর্ডান ,টেনিসে যেমন আছেন আন্দ্রে আগাসী । এদিকে অ্যাথলেটিকসে ব্রিটেনের মো ফারাহ তো চার বারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন।
বক্সিং এর বিখ্যাত দুটি নাম মাইক টাইসন এবং ফ্লয়েড মেডওয়েদার- কাকতালীয়ভাবে দুজনেই ন্যাড়া মাথার । ডোয়াইন জনসন কে চিনেন তো ? অবশ্য এই নামে না চেনারই কথা কারন উনি “দ্যা রক” নামেই আমাদের সবার কাছে পরিচিত- নিশ্চই তার ন্যাড়া মাথার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে না । রেসলিং জগতের আরও একজন ট্রেড মার্ক ন্যাড়া মাথার মালিক হচ্ছেন স্টিভ অষ্টিন ।
সিনেমা জগতেও ন্যাড়া মাথার মানুষের অভাব নেই –আমার প্রিয় অ্যাকশন হিরো জেসন স্ট্যাথাম, ট্রিপল এক্স বা ফার্স্ট এন্ড ফিউরিয়াস খ্যাত ভিন ডিজেল, ব্রুস উইলিস, শক্তিশালী ব্রিটিশ অভিনেতা পেট্রিক স্ট্রুয়ার্ট প্রত্যেকেই ন্যাড়া মাথার ।
বিশ্বকাপ ফুটবল দেখলে পিট বুলকেও চেনার কথা – ওই যে, ন্যাড়া মাথার যে মানুষটা ব্রাজিল বিশ্বকাপে সুন্দরি জেনিফার লোপেজের পাশে দাড়িঁয়ে “ওলে ওলা” গেয়েছিল ।
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ন্যাড়া মাথার জেফ বেজোস যে, একজন সফল ব্যবসায়ী সেটা ও বলার অপেক্ষা রাখ না ।
মাথা ন্যাড়া করার ক্ষেত্রে নারীরা ও পিছিয়ে নেই –সিনেমা প্রেমী হন আর না হন মিডিয়ায় সামান্য আগ্রহ থাকলেও পাশের দেশের ঋতুপর্ন ঘোষের নাম শোনারই কথা, গুনী এই অভিনেত্রী এবং পরিচালক সব সময়ই ন্যাড়া মাথায় থাকেন । ন্যাড়া করেছিলেন ম্যাড ম্যাক্সের হেরোইন চার্লিস থেরন আবার ধরেন আমেরিকান আইডল কেলি পিকল- যিনি স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে থাকা তার বাল্য বান্ধবীকে সমর্থন জানাতে মাথা ন্যাড়া করেছিলেন ।
ন্যাড়ার সাতকাহনের পর ন্যাড়া মাথার সমর্থনে আশা করি আর কিছু বলতে হবে না । এবং ভবিষ্যতে কারও মন চাইলেই বা প্রয়োজনে মাথা ন্যাড়া করতেও দ্বিধা করবেন না ।
কথিত আছে, ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায় – এটাও ভুল ! কারন মাথায় বেল না পড়া পরযন্ত ন্যাড়া বেল তলায় একবার না, যাবেন বারবার :)

Saturday, May 13, 2017

যুদ্ধাপরাধী নিয়ে ক্যাচাল

এই লেখাটা লিখেছিলাম ২০১৬ সালের ১৪ মে ।  আমার বাড়ির পাশের আমারই এক প্রাক্তন ছাত্র আমাকে যুদ্ধাপরাধীর শাস্তির ব্যাপারে একটা ফেসবুক পোষ্টে ট্যাগ দিয়েছিল। বিষয়টা ছিল ফিলিস্থিন উলামা পরিষদ এবং হিন্দুস্থান জামাত কর্তৃক নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করায় নিন্দা জানানো । এই বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছিলাম না কিন্তু ও যেহুতু আমাকে পোষ্টে ট্যাগ দিয়েছিল তারই প্রেক্ষিতে কিছু বলা । আমি আগেও বহুবার একটা কথাই বলেছি “ইসলাম আর জামাতে ইসলাম এক কথা নয় “ জামাত একটি আর্ন্তজাতিক সংগঠন। সারা বিশ্বে এর শাখা ছড়িয়ে আছে তাই জ্ঞাতি ভাইয়ের জন্য আর একজন জ্ঞাতি ভাই চিল্লাবে সেটাই তো স্বাভাবিক ।সেটা ভারতীয় ও হতে পারে পাকিস্তানীও হতে পারে । পাকিস্থান জামাত -হিন্দুস্থান জামাত ,মুসলিম ব্রাদারহুড আর বাংলাদেশের জামাতে ইসলাম সবাই একসূত্রে গাঁথা । এই আর্ন্তজাতিক সংগঠনটি যখন দেশপ্রেম আর দেশ নিয়ে কথা বলে তখন সত্যি আমার হাসি পায় ! আমাকে বুঝানোর কিছু নাই ,আমি মুসলিম পরিবারের সন্তান ,পারিবারিকভাবেই নৈতিক আর ধর্মীয় শিক্ষা পাইছি বাকিটুকু ইসলামী বইপত্র পড়ে শেখার চেষ্টা করছি ।আমি হুজুরদের কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস করি না । কারন যে কোন বিষয়ে তারা  জানুক আর না জানুক নিজের মত করে হলেও  একটা ব্যাখা দিয়ে দ্যায় :) আজ পর্যন্ত ছোট/বড় যে কোন হুজুরকে প্রশ্ন করে তার উত্তর দিতে পারেন নাই বা বলেছেন যে বিষয়টা আমার জানা নেই এমনটা  আমি হতে দেখিনি । মাথায় টুপি আর দাড়ি রাখলেই হুজুর রা নিজেদের ধর্মের সকল কিছুর অধিকারি ভাবতে শুরু করেন আর ধর্মীয় নেতাদের বিশ্বাস  করার প্রশ্নেই আসে না কারন এরা জাত ব্যবসায়ী, মানুষকে ধর্মের ভয় দেখিয়ে আর ধর্মকে পূজী করে ব্যবসা করেই এরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন ( উপরের দুটি মন্তব্যই অবশ্য পাইকারি হারে সবার জন্য প্রযোজ্য নয়, দুই একজন ব্যতিক্রম আছেন তবে তারা ধর্ম নিয়ে কখনই এত লাফালাফি করেন না- এমন দুই একজনকে বলতে শুনেছি -ধর্ম সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তালা আর সেটা রক্ষাও করবেন উনি, আমার কাজ সেটা পালন করা আর মানুষকে ধর্মের পথে দাওয়াত দেওয়া )। আমার ইসলাম আমাকে শিক্ষা দিয়েছে সহনশীলতা,মানবিকতার, ন্যায়ের । এই শিক্ষা নিয়ে একজন লেবাসধারী হুজুর যে কিনা যুদ্ধাপরাধী,হত্যাকারী তার পক্ষে কথা বলার শিক্ষা আমার ইসলাম আমাকে দ্যায় নাই । যাউগ্যা অত প্যাচাল না পারি- তুরস্ক নাকি তার রাস্ট্রদূতরে ডাইকা নিছে ,নিজামীর ফাসিঁর ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য । অনেকেই মনে করায় দিচ্ছেন যে তুর্কীরা আর্মেনিয়ানদের সাথে কি করেছিল । আমার অবশ্য অত কিছু মনে হচ্ছে না ,কারন  একদল যুদ্ধাপরাধী আর একদলকে সাপোর্ট দিবে এটাই তো স্বাভাবিক নাকি ? নিজামীরে ঝোলানোর পর পাকিদের নাকি কান্নাটা হচ্ছে দেখার মত !! ওরা মানবধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে !!হায়রে, যে দেশে প্রতিনিয়ত মানবধিকার ধুলায় লুন্ঠিত হয়-যেখানে একই ধর্মের হওয়া সত্বেও শুধুমাত্র শিয়া সূন্নী মতভেদের কারনে ‍পুলিশ ষ্টেশন থেকে বের করে জবাই করা হয়, যেখানে নারীদের কোন অধিকার নেই ,যেখানে মসজিদে নামাযের সময় বোমা বিষ্ফোরন হয় । খুন হত্যা যখম থেকে যে দেশে খেলোয়াররাও ছাড় পায় না , প্রতি সেকেন্ডে যেখানে মানবধিকার লূন্ঠিত হয় তারাই বলছে মানবধিকার এর কথা !! এর চাইতে হাস্যকর কিছু করার ক্ষমতা বোধহয় আর তাদের নেই ।পাকিরা চেচাঁমেচি করুক, ধর্ম ব্যবসায়ীরা হাসঁফাস করুক কিন্তু আমরা একটু তৃপ্তি পেতেই পারি । যারা এই দেশটার জন্ম চায় নি, যারা আমার দেশের মান আর সম্মানকে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে আমার দেশের ভাই,মামা,চাচাদের । ধর্ষন করেছে আমাদের মা বোনদের ,যাদের অন্যায় আর অত্যাচার থেকে বাদ যায়নি শিশুরাও । তাদের  বিচারে এতটুকু তৃপ্তি আমরা পেতেই পারি ।
#রাজাকার_নিপাত_যাক

Thursday, May 11, 2017

মধু’র বিড়ম্বনা

বিকেলে বসে আডাডা দিচ্ছি- হঠাৎ একটা ফোন আসল,
-আপনি কি নাসিরুল আলম মন্ডল বলেছেন ? আমি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস,লালমনিরহাট থেকে বলছি ,ঢাকা থেকে আপনার একটা পার্সেল  এসেছে ।
আমি তখন রংপুরে একটা ট্রেনিং এ তাই বললাম…
- আমি কি পার্সেল টা রংপুর থেকে পিক করতে পারি।    উনি বললেন
- পারবেন। তবে রবিবার নিতে হবে ।
আমি কথা মত রবিবার তাদের রংপুর অফিসে গেলাম,
ভাই লালমনিরহাট থেকে আমার একটা পার্সেল এসেছে বলার পরও উনি আমার দিকে তাকালেনই না,১০ মিনিট দাড়িয়ে থেকে আবার প্রশ্ন করায় বলল।
- আপনাকে কি ফোন করা হয়েছে ,আমি বললাম না,
- তাহলে আপনি  এসেছেন কেন ?
  আর কথা না বাড়িয়ে চলে এলাম। ৪ দিন অপেক্ষা করেও ফোন না আসায় সিলেট যাওয়ার পথে আবার তাদের অফিসে গেলাম, কিন্তু এদিনও কিছুক্ষন উপেক্ষা এরপর তাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পর তারা বললেন
-এখানে আপনি এটা পাবেন না,আপনি শাপলায় পার্সেল অফিসে যোগাযোগ করেন।
   ঢাকার বাস ধরার তারা ছিল তাই আর সেদিন পার্সেল অফিসে  গেলাম না । ৪দিন পর সিলেট থেকে ফিরে এসে তাদের পার্সেল অফিসে যোগাযোগ করলাম।কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা !  আমার কথা শোনারও যেন তাদের সময় নেই। অপেক্ষার অবসান শেষে ঘটনা বুঝিয়ে বলার পর তাদের কথা...
- আপনি এখানে এসেছেন কেন ,লালমনিরহাটে যোগাযোগ করেন।
লালমনিরহাট অফিসের নম্বর চাইলাম, কিন্তু তিনি আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়ারও প্রয়োজন মনে করলেন  না ।আমাকে যেখান থেকে ফোন দেয়া হয়েছিল সেখানে ফোন দিলাম,এই নামের পার্সেল আমাদের কাছে নেই বলেই তারা ফোন কেটে দিল।( যেন আমি কথা বললে তাদের টাকা কাটত) অবশেষে অন্য মারফত লালমনিরহাট পার্সেল অফিসের নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করলাম,এই ভদ্রলোক প্রথমে সেভাবে কথা বলতে না চাইলে , একটু রাগারাগিই করলাম । বললাম ,আপনার কাছে তো আমি টাকা চাচ্ছি না,তথ্য চাচ্ছি আর আপনারা ক্লায়েন্ট এর সাথে এত খারাপ ব্যবহার করেন কেন ? এতে উনি একটু নরম হলেন এবং আমাকে বুঝিয়ে শান্ত করলেন।
অতঃপর ৮ তারিখ বিকেলে ৩০ কিঃমি যার্নি করে  লালমনিরহাট গেলাম সেই অফিসে ,যেখান থেকে আমাকে প্রথম ফোন করা হয়েছিল ।সেখানে যিনি দায়িত্বে আছেন ১৫ মিনিট দ্বাড় করিয়ে রেখে খাতা খোজাঁ শুরু করলেন এবং কিছুক্ষন পর বললেন
- আপনি  নাসিরুল আলম মন্ডল ।
আমি বললাম - জ্বি হ্যাঁ !
-আপনি এখানে এসেছেন কেন,রংপুরে যোগাযোগ করেন“     কত তারিখে রংপুর পাঠিয়েছেন খাতা দেখে তাও বললেন।  ওনাকে বললাম রংপুরে ৩ দিন খোজঁ নিয়েছি।
তার এক কথার উত্তর - আবার যান ।
এই কথোপকথনের সময় উনি আমার দিকে তাকানোরও প্রয়োজন বোধ করেন নাই । এরপর রাগ করে ওনাকে বললাম রংপুর কোথায় পাঠিয়েছেন ফোন দেন । উনি ফোন না দিয়ে আমাকে নম্বর দিয়ে ফোন করতে বললেন। কি আর করা আমি ফোন দিলাম কিন্তু আমাকে প্রায় ৬ মিনিট লাইনে রেখেও রংপুর থেকে  বলতে পারল না যে,পার্সেলটা তাদের কাছে গেছে কিনা ? এরপর লালমনিরহাটের সেই ব্যক্তিকে নানা প্রশ্ন করলেও তিনি কোন উত্তর না দিয়ে একবার শুধু বললেন “আমার রংপুর পাঠাতে একটু দেরি হয়েছে “। বাধ্য হয়ে ঢাকা থেকে যিনি পাঠিয়েছেন #Hasan ভাই তাকে ফোন দিয়ে জানালাম । এর পরদিন আবার ৩৫ কিঃমিঃ এর হ্যাপা পেড়িয়ে  রংপুর অফিসে গেলাম কিন্তু সেখানেও আমার পার্সেলের কোন খোজঁ না পেয়ে সব আশা ছেড়ে দিয়ে বসে ছিলাম । কিন্তু আজ দুপুরে লালমনিরহাট থেকে আবার ফোন এল ,
- ভাই আপনি কি নাসিরুল আলম মন্ডল বলছেন , জ্বি হ্যাঁ ,
- আপনার পার্সেল টা আসলে রংপুর পাঠানো হয় নাই,নিচেই পড়ে ছিল আমরা আসলে দেখতে পাই নাই :O :O
এরপরই হাসান ভাইয়ের ফোন আসায় বুঝলাম ,ঘটনাটা ঘটল শুধুমাত্র হাসান ভাই তাদের ঢাকার অফিসে যোগাযোগ করেছেন  বলেই ।
জানিনা আবার নতুন কিছু ঘটবে কিনা তবে আশা করছি ২/৩ দিনের মধ্যে পার্সেলটা উঠিয়ে নিতে পারব কিন্তু মাঝখান থেকে  আমার প্রায় ৬/৭ শত টাকা খরচ হল :( নষ্ট হল অনেক গুলো কর্ম ঘন্টা,  :( উপরি পাওনা হিসেবে পেলাম কুরিয়ার সার্ভিস এর কর্মীদের যাচ্ছে তাই ব্যবহার :( :(

সরকারি ডাক বিভাগ নিয়ে নানা ধরনের রম্য গল্প প্রচলিত আছে আর এই যদি হয় একটা বেসরকারি  পার্সেল অফিসের সেবার অবস্থা , আমরা তাহলে যাব কোথায় ? এই পার্সেলটা হতে পারত জরুরী কোন ঔষধের , হতে পারত অন্য কিছু জরুরী বস্তু ! কিন্তু তাদের আচরন দেখে মনে হয়  আমাদের গ্রাহকদের সুবিধা অসুবিধায় তাদের কিছু যায়  আসে না :(
জানি ফেবুতে লিখে কোন লাভ নেই !! তারপরও শুধু শেয়ার করা জন্যই লিখলাম । আফসোস কবে যে আমরা সেবাগ্রহীতারা সকলে মিলে এইসবের বিরুদ্ধে জোড়ালো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারব ?